Search

Bank Report of bangladesh by Sakib Tanu

Banking sector news& views of Bangladesh

Category

নতুন ব্যাংক

4131503-prothom-alo-05-apr-16-13

চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি; এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পর্ষদ সভায় বহিরাগতরা

প্রবাসীদের উদ্যোগে গঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালকদের বড় অংশ দেশের বাইরে অবস্থান করায় অনেক সময় বিকল্প পরিচালকরাই ব্যাংকটির পর্ষদ সভায় অংশ নেন। এ সুযোগে বহিরাগতরাও ব্যাংকটির পর্ষদে অংশ নিচ্ছেন। এমনকি চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

জানা গেছে, নিয়ম ভেঙে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পর্ষদ সভায় অংশ নিচ্ছেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শহীদুল আহসান। শুধু তা-ই নয়, তিনি সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকাও রাখছেন। এভাবেই পর্ষদ সভায় পাস হচ্ছে বড় অঙ্কের ঋণ প্রস্তাব। তার প্রতিষ্ঠানের ঋণও পাস হয়েছে একই প্রক্রিয়ায়। এতে আমানতকারীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করেছেন ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন পরিচালক।

Continue reading “চেয়ারম্যানকে প্রাণনাশের হুমকি; এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পর্ষদ সভায় বহিরাগতরা”

ফারমার্স ব্যাংক; যাত্রার তিন বছরেই ৪০০ কোটি টাকার ঋণ অনিয়ম

২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল তফসিলভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা করে বেসরকারি খাতের দ্য ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেড। এর পর তিন বছরও হয়নি। এর মধ্যেই প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ঋণ অনিয়মে জড়িয়েছে ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে উঠে এসেছে অনিয়মের এ চিত্র। এজন্য দায়ী করা হয়েছে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যানকে। ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Continue reading “ফারমার্স ব্যাংক; যাত্রার তিন বছরেই ৪০০ কোটি টাকার ঋণ অনিয়ম”

বেসিক ও ফারমার্স ব্যাংকে অনিয়মে দুই ভাই

মাহাবুবুল হক চিশতী ও মাজেদুল হক চিশতী। সম্পর্কে দুই ভাই। বাবুল চিশতী নামে পরিচিত মাহাবুবুল হক চিশতী ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালক। একই সঙ্গে ব্যাংকটির নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যানও। শামীম চিশতী নামে পরিচিত মাজেদুল হক চিশতী একজন ব্যবসায়ী। বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নিয়েছেন দ্য ওয়েল টেক্স, আবিদ ডায়িং মিলস লিমিটেড, ওয়েল সোয়েটার্স ও আনাম শকসের নামে।

নতুন অনুমোদন পাওয়া দ্য ফারমার্স ব্যাংকে সম্প্রতি যে অনিয়ম হয়েছে, তার দায় পড়েছে মাহাবুবুল হক চিশতীর ওপর। আর বেসিক ব্যাংকে যে ঋণ অনিয়ম হয়েছে, তাতে নাম এসেছে মাজেদুল হক চিশতীর। অর্থাৎ ফারমার্স ও বেসিক ব্যাংকের অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন চিশতী পরিবারের এ দুই ভাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া গেছে; বিভিন্ন পর্যায়ে খোঁজ নিয়েও যার সত্যতা মিলেছে।

সূত্রমতে, ফারমার্স ব্যাংকের মতিঝিল ও গুলশান করপোরেট শাখার ঋণ প্রদান করা হয় নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীর একক ক্ষমতায়। কোনো ধরনের দাফতরিক প্রক্রিয়া ছাড়াই মাহাবুবুল হক চিশতীর লিখিত নির্দেশে গুলশান শাখা থেকে সাইফ পাওয়ারটেককে আড়াই কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়। পরে গ্রাহকের ঋণ ৪ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয় তারই মৌখিক নির্দেশনায়।

একইভাবে নির্বাহী কমিটির সভায় ঋণ প্রস্তাব উত্থাপন না করেই চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে প্রাইম ইসলামী সিকিউরিটিজকে ৫ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা দেয়া হয় ব্যাংকটির মতিঝিল শাখা থেকে। গুলশান শাখা থেকে ইউনাইটেড ব্রিকস ও ফুলতলা ফিলিং স্টেশনের ঋণ প্রস্তাব জমা দেয়ার আগেই গত বছরের ১০ মার্চ নির্বাহী কমিটির সভায় ৮ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। এর পর ১০ মার্চ শাখা থেকে ঋণ আবেদনের বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য দেয়া হলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। একই শাখা থেকে আরবান ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ঋণ প্রস্তাব জমা দেয়ার আগেই ১৫ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করা হয়। চিটাগং ফিশারিজকেও ১৮ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা দেয়া হয় ঋণ প্রস্তাব পাওয়ার আগেই।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত মাসে মাহাবুবুল হক চিশতীর কাছে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে এসব অনিয়মের দায় আপনার ওপরই বর্তায়। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৬ ধারার আওতায় কেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলো।

মাহাবুবুল হক চিশতী এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে এখন কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শেষ পর্যন্ত এসব ঋণ আদায়ের দায়িত্ব তার ওপর পড়তে পারে বলে সূত্রগুলো বলছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই ফারমার্স ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে আদ দ্বীন হাসপাতালকে ২০ কোটি, সিয়াম এন্টারপ্রাইজকে ৪ কোটি, এইচএম এন্টারপ্রাইজকে সাড়ে ৪ কোটি, শুভ্র এন্টারপ্রাইজকে সাড়ে ৮ কোটি, এনআর ট্রেডিংকে ৩ কোটি ও পাণ্ডুঘর লিমিটেডকে দেড় কোটি টাকার ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এজন্য ব্যাংকটির কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা শাখা থেকে ১৮৫ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা দেয়া হয় মাজেদুল হক চিশতীকে। দ্য ওয়েল টেক্স, আবিদ ডায়িং মিলস লিমিটেড, ওয়েল সোয়েটার্স ও আনাম শকসের নামে দেয়া হয় এসব ঋণ। চার প্রতিষ্ঠানকে ১৮৫ কোটি টাকার এ আর্থিক সুবিধার বিপরীতে মর্টগেজ রয়েছে মাত্র ৪২ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে এসব হিসাবের মাধ্যমে নিয়ম ভেঙে অর্থ গ্রহণের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। খেলাপি হয়ে গেলেও ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় তা না করে উল্টো শাখাকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত না করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

এ তথ্য পাওয়া যায় ব্যাংকটির দিলকুশা শাখার এক চিঠিতে। গত বছরের ৩১ মার্চ প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে দিলকুশা শাখা জানায়, ৩১ মার্চ ভিত্তিতে শাখার ঋণ শ্রেণীকৃত করা হয়েছে। তবে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি হিসাব খেলাপি হলেও তা নিয়মিত হিসেবে দেখানো হয়।

জানা গেছে, মাজেদুল হক চিশতী এর আগে একই প্রতিষ্ঠানের নামে প্রিমিয়ার ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন। সে সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে এসব ঋণে অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। পরে তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংক ছেড়ে বেসিক ব্যাংকে চলে আসেন। বেসিক ব্যাংকেও একই পথ অবলম্বন করেন। বেসিক ব্যাংকের তত্কালীন চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের ব্যক্তিগত সম্পর্কের সুবাদেই সে সময় এ সুবিধা দেয়া হয় এ ব্যবসায়ীকে।

যোগাযোগ করা হলে মাজেদুল হক চিশতী গতকাল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কোনো অপরাধ করিনি। ব্যবসা ভালো না থাকার কারণে ঋণ পরিশোধ সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। তাছাড়া রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর পোশাক খাতের ব্যবসা এখনো আশানুরূপ ভালো যাচ্ছে না।

জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চে বিশেষ বিবেচনায় এসব ঋণ নিয়মিত করেছেন মাজেদুল হক চিশতী। ব্যাংকটির দিলকুশা শাখার এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশেষ সুবিধা পাওয়ার পর গ্রাহক ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে আইনি পদক্ষেপের ভয়ে তিনি সম্প্রতি যোগাযোগ করে ঋণটি নিয়মিত করেছেন। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক থেকে ঋণটি নিয়মিত রয়েছে।

এসব বিষয়ে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, একজন (মাহাবুবুল হক চিশতী) পরিচালক হিসেবে অন্যায় করেছেন। অন্যজন (মাজেদুল হক চিশতী) ঋণে অনিয়ম করেছেন। প্রচলিত বিধিবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিছু ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সরকারি আমানতে ভর করে বড় হতে চায় নতুন ব্যাংক

ব্যাংকিং সেবাবঞ্চিত গ্রাহকদের সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে নতুন কিছু ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয় মহাজোট সরকারের শেষ সময়ে। তবে অনুমোদন পাওয়া এ ব্যাংকগুলো হাঁটছে উল্টো পথে। নতুন গ্রাহক সৃষ্টির মাধ্যমে আমানত সংগ্রহের বদলে সরকারি তহবিলের অংশবিশেষ আমানত হিসেবে পেতে ব্যাংকগুলো কার্যত এখন তদবির চালাচ্ছে। মূলত সরকারি আমানতের ওপর ভর করেই ব্যাংকগুলো বড় হওয়ার সুযোগ খুঁজছে।
নিয়মানুযায়ী, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অলস অর্থ ও সঞ্চয়ের ৭৫ শতাংশ কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন ব্যাংকে রাখতে হয়। বাকি ২৫ শতাংশ তহবিল বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখা যেতে পারে। নতুন অনুমোদন পাওয়া নয়টি বেসরকারি ব্যাংক এ তহবিলই আমানত হিসেবে পেতে তত্পরতা চালাচ্ছে।
গত এক মাসে নতুন এ ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, তিতাস গ্যাস, পেট্রোবাংলা, চট্টগ্রাম বন্দর, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড, ওয়াসা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সিভিল এভিয়েশনসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তহবিল আমানত হিসেবে সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করেছে। নতুন ব্যাংকগুলো সরকারি আমানত পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবে— অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা এ প্রজ্ঞাপনই নথি হিসেবে সরকারি ওইসব প্রতিষ্ঠানে উপস্থাপন করছে ব্যাংকগুলো।
গত ২২ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে নতুন ব্যাংকগুলোয় তারল্য জোগানে সরকারি আমানত রাখার সুযোগ করে দেয়া হয়। আগে নতুন ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর পাঁচ বছর পর সরকারি আমানত গ্রহণের সুযোগ পেত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় সরকার থেকে পাওয়া তহবিলের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখতে পারবে। এসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিলের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা যাবে।
এ প্রসঙ্গে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে সরকারি কিছু আমানত পেয়েছি।’ অন্যদিকে ফার্মার্স ব্যাংকের এমডি চৌধুরী মোশতাক আহমেদ বলেন, সরকারি আমানত পাওয়ার চেষ্টা চলছে, বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।
 
জানা গেছে, সম্প্রতি ইউনিয়ন ব্যাংক এক বছর মেয়াদি মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট পাওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। একই কায়দার আবেদন করে আমানত পেয়েছে এনআরবি কমার্শিয়াল ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক। পাশাপাশি মেঘনা ব্যাংকেরও সরকারি আমানত সংগ্রহের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক মোকাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে আমানত চেয়ে আবেদন করলেও তা এখনো পাইনি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে শুনেছি।’ তবে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘সরকারি আমানত নেয়ার সুযোগ তৈরি হলেও ঋণ চাহিদা এখনো সৃষ্টি হয়নি। তাছাড়া দেশের যে অবস্থা, তাতে আমানত নিয়ে কী করব। বিনিয়োগের পরিবেশই তো তৈরি হচ্ছে না।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২১ নভেম্বর পর্যন্ত হিসাবে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের আমানত ও ঋণ দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪৬০ ও ২৮৭ কোটি টাকা। এসবিএসির ৩০৭ ও ২১০ কোটি, মেঘনার ২৩৯ ও ১০৯ কোটি, মিডল্যান্ডের ২৭৩ ও ১৩৫ কোটি, ফার্মার্সের ১৫২ ও ১১ কোটি, ইউনিয়নের ৪৬৩ ও ৫৬৮ কোটি, এনআরবির ১৪৮ ও ৭ কোটি ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ২৫ ও ৯১ কোটি টাকা। এছাড়া মধুমতি ব্যাংকের আমানত মাত্র ১২ লাখ।
নতুন ব্যাংকগুলোর পরিচালন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বর্তমানে বিনিয়োগ পরিস্থিতি মন্দা। পুরনো ব্যাংকগুলোই অলস অর্থ নিয়ে বিপাকে আছে। আমরা জনগণের কাছ থেকে আমানত নিলে বেশি হারে সুদ দিতে হবে। তাই সরকারি আমানতের দিকেই নজর বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা শিথিল করায় তার সদ্ব্যবহার করছে ব্যাংকগুলো।’

– See more at: http://bonikbarta.com/first-page/2013/12/18/26064#sthash.HT9Tc2ue.dpuf

ঝুঁকিপূর্ণ অর্থায়নে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক

মাত্র ৪ কোটি টাকা জামানতের বিপরীতে ১৪০ কোটি টাকার ঋণসীমা মঞ্জুর করেছে নতুন অনুমোদন পাওয়া এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা। সুবিধাটি দেয়া হয়েছে আহসান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজকে, যার কর্ণধার মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক শহিদুল আহসান। ব্যক্তি পরিচয়কে প্রাধান্য দিয়ে এনআরবি কমার্শিয়াল ঝুঁকিপূর্ণ এ অর্থায়ন করেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, একই গ্রুপের কাছে সোস্যাল ইসলামী ও এক্সিম ব্যাংকেরও ৩০১ কোটি টাকার পাওনা রয়েছে। এসব ঋণের ক্ষেত্রেও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। নিয়ম ভেঙে দেয়া এসব ঋণ আদায় ও দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এবং শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যাংক তিনটিকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক শহিদুল আহসান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমার গ্রুপের ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইনি আচরণ করছে না। এমন আচরণ করলে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য বলতে কিছু থাকবে না। ব্যাংক নগদ টাকা তো খুবই কম দিয়েছে, বেশির ভাগই ঋণপত্র খোলা হয়েছে। পারস্পরিক জোগসাজশ হলে নগদ অর্থ নিতাম, ঋণপত্র খুলতাম না।’
যোগাযোগ করা হলে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান মুজিবুর রহমান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জানা গেছে, শহিদুল আহসানের বিরুদ্ধে ব্যাংক থেকে ৬৩৪ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগনামা গত ১০ জুন অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন পরিচালনা করে। এনসিসি, স্ট্যান্ডার্ড, শাহজালাল, সোস্যাল ইসলামী, এক্সিম ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে আহসান গ্রুপের ঋণ থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শন পরিচালনা করে শুধু সোস্যাল ইসলামী, এক্সিম ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে পরিচালিত পরিদর্শনে উঠে আসে, ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা আহসান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের অনকূলে ১৪০ কোটি টাকা ঋণসীমা মঞ্জুর করে। অথচ ঋণ অনুমোদনের আগে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ক্ষমতা, উৎপাদিত পণ্য, পণ্যের মজুদ, বিপণনব্যবস্থা বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়নি। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতার তুলনায় বেশি ঋণসীমা মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা জামানত নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ খাতে ঋণসীমা মঞ্জুর করা হয়েছে। পোলট্রি ও হ্যাচারি খাতের ব্যবসা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এ খাতে নেয়া ঋণের উল্লেখযোগ্য অংশ অন্য খাতে স্থানান্তর হওয়ায় সম্ভাবনা থাকে, যা ঋণ আদায়কে অনিশ্চিত করে তুলবে। আর এর দায় বর্তাবে শাখা ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে ক্রেডিট কমিটি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমনকি পরিচালনা পর্ষদের ওপরও।
অনুমোদিত ঋণের মধ্যে ৩০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এজি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের অনকূলে এরই মধ্যে বিতরণ করেছে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক। এর মধ্যে ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ৩১ মার্চ পর্যন্ত গ্রুপটির কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা ছিল ৩০১ কোটি টাকা।
জানা গেছে, ব্যাংকটির প্রিন্সিপাল শাখা বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের অনুমোদন পাওয়ার আগেই পরিচালনা পর্ষদ এজি এগ্রোর ঋণপত্র খোলার অনুমোদন দেয়। ফলে ব্যাংকটি যমুনা ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণপত্র খোলে, ওই ব্যাংকের পর্ষদে যা অনুমোদিত হয়।
এর বাইরে একই গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কাছে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের করপোরেট শাখার পাওনা ১৯১ কোটি টাকা। এর বিপরীতে জামানত হিসাবে ২৬ কোটি টাকার জমি ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার মর্টগেজ হিসেবে রয়েছে। অর্থাৎ ৩১ কোটি টাকা দিয়ে ঋণের মাত্র ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ঋণ আচ্ছাদিত করা যায়। একইভাবে গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস ট্রেডার্সের অনকূলে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের গুলশান শাখায় ১২ কোটি টাকার ঋণসীমা মঞ্জুর করা হয়েছে। এজি প্রোপার্টিজের ঋণের ৫৫ কোটি টাকা ২০ দিনের মধ্যে ছাড় করা হয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতেও পর্যাপ্ত জামানত নেই।
এ বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হায়দার আলী মিয়া বলেন, ‘আমরা ঋণ প্রদানে কোনো অনিয়ম করিনি। তবে অনুমোদন হওয়ার আগেই ঋণ দেয়া হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে এর বিধান আছে। এসব ঋণে কোনো সমস্যাও নেই।’

– See more at: http://bonikbarta.com/last-page/2013/11/06/21446#sthash.mUgA9iGo.dpuf

আত্মস্বীকৃত প্রতারক একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান!

অর্থ সংগ্রহ করতে পারেনি ফার্মার্স ও এনআরবি ব্যাংক

সাকিব তনু

কার্যক্রম শুরুর আবেদন করলেও সম্পূর্ণ অর্থ এখনো সংগ্রহ করতে পারেনি নতুন অনুমোদন পাওয়া মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ফার্মার্স ব্যাংক ও ইকবাল আহমেদ ওবিইর এনআরবি ব্যাংক। এ ছাড়া ফজলে নূর তাপসের মধুমতি ও নিজাম চৌধুরীর এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সময় বাড়ানোর আবেদন নিয়ে আজ বাংলাদেশ ব্যাংক পর্ষদের সভায় আলোচনা হবে। অর্থায়ন যাচাইয়ে আরও চারটি ব্যাংকের নথি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, দুটি ব্যাংকের সময় বাড়ানোর আবেদন আজ পরিচালনা পর্ষদের সভায় উত্থাপন করা হবে। পর্ষদই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
অর্থায়ন যাচাইয়ের যে চারটি ব্যাংকের নথি এনবিআরে পাঠানো হয়েছে সেগুলো হলো— সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ইউনিয়ন ব্যাংক, সংসদ সদস্য এইচএন আশিকুর রহমান চৌধুরীর মেঘনা ব্যাংক, এসএম আমজাদ হোসেনের সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ও প্রধানমন্ত্রীর আয়কর উপদেষ্টা এসএম মনিরুজ্জামান খন্দকারের মিডল্যান্ড ব্যাংক। একই সঙ্গে ঋণ তথ্য ব্যুরোয়ও (সিআইবি) পাঠানো হয়েছে এসব নথি।
এসকে সুর চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, চারটি ব্যাংকের অর্থায়ন সত্যায়ন করার জন্য এনবিআরে পাঠানো হয়েছে। ব্যাংকগুলো সব শর্ত পূরণ করলেই লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ফার্মার্স ব্যাংক ও ইকবাল আহমেদ ওবিইর এনআরবি ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম শুরুর আবেদন করলেও প্রয়োজনীয় ৪০০ কোটি টাকা এখনো সংগ্রহ করতে পারেনি। ফলে এ দুটি ব্যাংকের আবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পড়ে আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় দুই দফা আবেদন করা নতুন ৯টি ব্যাংকের প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয়। গত ৪ এপ্রিল প্রবাসী উদ্যোক্তাদের অর্থায়নে তিনটি ও ৮ এপ্রিল দ্বিতীয় দফা দেশী উদ্যোক্তারা ছয়টি ব্যাংক স্থাপনের অনুমোদন পায়। ৩০টি শর্ত দিয়ে ১৭ এপ্রিল এসব ব্যাংকের সম্মতিপত্র দেয়া হয়। সেখানে ছয় মাসের মধ্যে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর উপযুক্ততা অর্জন করে আবেদন করতে বলা হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী, গত ১৬ অক্টোবরের মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংক, মেঘনা, ফার্মার্স, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স, মিডল্যান্ড, এনআরবি কমার্শিয়াল ও এনআরবি ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর আবেদন করে। মধুমতি ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর জন্য আরও ছয় মাস ও নিজাম চৌধুরীর এনআরবি গ্লোবাল আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করে।
এদিকে ফরাছত আলীর এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের অর্থায়ন প্রবাসীদের হওয়ায় তা যাচাই করা হবে না। তবে পরিচালকদের তথ্য সিআইবি থেকে যাচাই করা হচ্ছে।

Create a free website or blog at WordPress.com.

Up ↑